1. [email protected] : ekhonisomoy :
  2. [email protected] : facfltd :
একজন সফল নারী উদ্যোক্তা শাহনাজ আরেফিন লাজু - এখনই সময় টিভি
May 18, 2025, 10:36 pm

একজন সফল নারী উদ্যোক্তা শাহনাজ আরেফিন লাজু

Reporter Name
  • Update Time : Wednesday, November 8, 2023
  • 354 Time View

সৈয়দ সাইফুল করিম: কেরানীগঞ্জের হযরতপুর ইউনিয়নের বৌনাকান্দি গ্রামের শাহনাজ আরেফিন লাজু ঢাকা জেলার সদস্য হিসেবে একজন নারী উদ্যোক্তা খামারী। ২০০৯ সালে একটিমাত্র দেশী মুরগী এবং এর ডিম থেকেই বাচ্চা ফুটিয়ে ছোট আকারে শুরু হয় তার খারমারের কাজ। প্রথমদিকে পরিবার থেকে  কোনরকম সহায়তাই পায়নি। পুজির অভাবে লাজু তার কাজটিকে বেশিদূর নিয়ে যেতে পারছিল না। এমন সময় তার মামি শুভাকাঙ্খী হয়ে ২০২০ সালে তার পাশে দাঁড়ায় এবং খামারটিকে চলমান রাখতে পুঁিজ হিসেবে ১০০০০.০০ টাকা দেন। এই পুজি দিয়ে আরো মুরগী কিনে বাচ্চা ফুটিয়ে শুরু হয় বড় আকারে খামার করার চিন্তা। ডিম বিক্রির টাকা থেকে খামারের কাজে লাগিয়ে কিছু টাকা ব্যাংকে জমা শুরু করে এবং জমানো টাকা দিয়ে ফেন্সী মুরগী কিনে। এই মুরগী থেকে ডিম পাওয়া শুরু হলে লাজু সাফল্যের পথ পেয়ে যায়। সে বলে, ফেন্সি মুরগীর ডিম মানেই সোনার ডিম পাওয়া। পাবর্তীতে সে কিছু কবুতর কিনে, কাজের প্রতি আগ্রহ, নিষ্ঠা আর পরিশ্রম দেখে তার মামি তাকে আরো কবুতর কেনার জন্য আবারও টাকা দেয়। কিন্ত সে টাকা নষ্ট না করে টাঙ্গাইল এর তানিশা নামে একজন নারী উদ্যোক্তা যিনি খামারী গ্রুপেরও একজন এডমিন, তার কাছ থেকে ফেন্সির বাচ্চা কিনে এবং সৌখিন খামারী এসোসিয়েশন বাংলাদেশ গ্রুপ থেকে অনেক সাপোর্ট পেয়ে শাহনাজ আরেফিন লাজু সংসারের কাজের পাশাপাশি বাড়ির আঙ্গিনায় মুরগী পালন থেকে অর্থ উপার্জন করে নারী খামারী হিসেবে এখন সফল একজন উদ্যোক্তা।
বর্তমানে তার ছোট খামাড়টিতে রয়েছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির মুরগি। এর মধ্যে ঊল্লেখ্যযোগ্য মুরগি হচ্ছে সিল্কি, কোচিন, সেরেমা, ইওকোহামা, সোনালি এবং দেশিসহ আরও কয়েক প্রজাতীর মুরগি। তার খামারটির নাম দিয়েছে ‘লাজুর সৌখিনখামার’ যা এলাকায় এখন লাজুর খামার নামে সকলের কাছে পরিচিত। মুরগীর লালন-পালন ও পরিচর্যা থেকে শুরু করে রোগ বালাই এর প্রতিষেধক প্রদানের কাজেও লাজু এখন অনেক পরিপক্ক। এলাকার অনেকেই এখন তার কাছ থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে আধুনিকভাবে মুরগী পালনে অনুপ্রাণীত হচ্ছে এবং আয়ের পথ করে নিচ্ছে।
শীত মৌসুমে মুরগীর বিশেষ সতর্কতা নিয়ে যত্ন নিতে হয়। এসময়ে কীভাবে পশু-পাখির যত নিতে হয় এবং কিভাবে তিনি যত্ন নেন এ বিষয়ে তার সাথে আলাপকালে জানালেন, ‘যত্নটা দুইভাবে করা যায় এক-প্রাকৃতিকভাবে দুই-  বিভিন্ন ঔষধের মাধ্যমে। শীতে প্রাকৃতিকভাবে আমরা কুসুম কুসুম গরম পানির সাথে মধু, তুসলীপাতা, আদা দিতে পারি। দুপুরে বেলায় গরম ভাতের মাড়ের সাথে  ভুষি দিয়ে লেয়ার ওয়ান ডিম পাড়া মুরগিকে দিয়ে থাকি, মোরগের স্টাচার ও গমের ভূষির সাথে মাড় দিয়ে থাকি আর বেবি মুরগীদেরকে ভালোমানের ফীড দিয়ে থাকি। এছাড়াও আমরা মুরগিকে গম, ধান, বিভিন্ন ডাল, সরিষা, ডাবরি, ছোলা মিক্সড করে দানাদার খাবার দিয়ে থাকি।’’
তিনি আরো বলেন, সন্ধ্যায় তারাতারি খাবার দিয়ে ঘরে আটকে রেখে খামাড়ের চারপাশ ত্রিপাল, ছালা বা পলিথিন দিয়ে আটকাতে হবে যাতে কোনক্রমেই বাতাস ঢুকতে না পারে। এছাড়া আদা, তুলসীপাতা, কালিজিরা সিদ্ধ করে ও পানি খাওয়াতে হবে। ঘরে লাল লাইট লাগিয়ে রাখতে হবে, যাতে ঘরটা গরম থাকে। যা মুরগীর জন্য সবচেয়ে জরুরী। পাশাপাশি প্রতিদিন এদের পায়খানা চেক করে  দেখতে হবে, এতে কোন সমস্যা মনে হলে তাৎক্ষণিক অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। শাহনাজ আরেফিন লাজু মুরগী পালনের পাশাপাশি  বেবি মুরগী বিক্রয় করেও অর্থ উপার্জন করছেন। তার উপার্জিত অর্থ খামাড়ের কাজে ব্যয় করেও প্রতি মাসে তার ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা লাভ থাকে যা সংসারের অনেক কাজে ব্যয় করছেন।
লাইজু তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ঘরে বসে বাড়তি আয় করে আজ আমি স্বাধীনভাবে চলার পথ তৈরি করতে পেরে খুবই আনন্দিত। এখন পরিবারের সকলেই সাপোর্ট করে। আমার খামার হলো সংসারের একটা আয়ের অংশ, হেরেগিয়ে পিছিয়ে যাইনি, বারবার চেষ্টার পর ২০২৩ সালে আমি একজন সফল নারী খামারী-‘করবো খামার গড়বো দেশ, বেকারমুক্ত বাংলাদেশ।’’

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved
Theme Customized By LiveTV