দীর্ঘ চাকুরী জীবনে বেপরোয়া ঘুষ গ্রহণ করে প্রায় শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন। স্ত্রী সন্তানদের নামে বেনামে তার নিজ গ্রাম শরীয়তপুরের নড়িয়া থানাধীন মান্ডা গ্রামে কিনেছেন প্রায় শতাধিক বিঘা জমি। খোদ রাজধানীর কদমতলী থানাধীন দক্ষিণ দনিয়ায় রয়েছে তার নিজ নামে ৬টি বহুতল ভবন এবং তোপখানা রোডের বিএমএ ভবন মার্কেটে রয়েছে ৩টি দোকান। বলছি কাস্টমস’র অবসরপ্রাপ্ত সহকারি পরিচালক আলতাফ হোসেনের কথা।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় এই কর্মকর্তা ২০০৯ সালে অবসরে যায়। এর আগে তিনি এনবিআর প্রধান কার্যালয়, ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম পোর্ট, বেনাপোল সহ বিভিন্ন লোভনীয় স্থানে নিয়োজিত থেকে দু হাতে অবৈধ উপার্জনের মাধ্যমে প্রায় শত কোটি টাকার মালিক হয়েছে।
বর্তমানে রাজধানীর দনিয়াতে বসবাস করছে অবসরপ্রাপ্ত কাস্টম্স কমিশনার আলতাফ হোসেন । স্থানীয় এলাকায় চা দোকানী থেকে শুরু করে সবাই তাকে ঘুষখোর আলতাফ নামেই চেনে। অনুসন্ধানে জানাযায় এই অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তার রাজধানীর কদমতলী থানাধীন দক্ষিণ দনিয়ায় ৬টি বহুতল বাড়ী দৃশ্যমান। নুরপুর ১ নং রোডস্থ প্লট নং- ৮২৬, দক্ষিণ দনিয়ার নুরপুরে প্লট নং- ১৩৩৮/৪, পলাশপুর ১ নং রোডের প্লট নং- ৩৪/১৪, পলাশপুরের ৫ নং রোডের প্লট নং- ৩/৮, পলাশপুর জিয়াস্বরনী রোডে প্লট নং- ২১,পলাশপুর ১নং রোডের প্লট নং- ৩৪/১৫, এছাড়াও রাজধানীর তোপখানা রোডস্থ বিএমএ ভবনের মেডিকেল সামগ্রী মার্কেটে রয়েছে ৩টি দোকান। মেয়ের জামাইকে কিনে দিয়েছে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ন পয়েন্টে কমিউনিটি সেন্টার সহ প্লাট।
শরীয়তপুরের নড়িয়া থানাধীন মান্ডা গ্রামের নাম প্রকাশে অনাচ্ছুক ৬৫ বয়াসি একজন স্থায়ী বাসিন্দা সহো বেশ কয়েকজন প্রতিবেদককে জানান, একজন কেরানী কি ভাবে এত সম্পদ কিনতে পারে। আমাদের যানামতে তার দাদার বা বাবার এত জায়গা জমি কখনো ছিলো না। তারা আরো জানান,আলতাফের ছেলের ভয়ে গ্রামে কেউ কথা বলতে ভয় পায়। আমাদের জানা মতে আলতাফ হোসেন মুক্তি যোদ্ধা করেনি তাহলে সে কি ভাবে মুক্তি যোদ্ধা হয়ে থাকে। সে একজন ভুয়া মুক্তি যুদ্ধা।
রাজধানীর দনিয়ার স্থায়ী কয়েকজন বাসিন্দা প্রতিবেদককে জানান, আমরা জানি আলতাফ হোসেন কাস্টম্সে চাকরি করতো, কিন্তু কত বেতন পাইতো তা জানিনা ,কিছু দিন পর পর দেখতাম ওনি বাড়ি,জায়গা কিনে, আমাদের এ এলাকায় ছোট বড় সবাই ঘুষখোর আলতাফ নামেই চেনে তাকে। ওনার দেশের বাড়ি শরীয়তপুরে জানি। কম মানুষের সাথে মিলা মেশা করে থাকে আলতাফ সাহেব।
অনুসন্ধানে যানা যায় আলতাফ হোসেন কর্ম জীবনে উপর লেবেল ম্যানেজ করে ঘুষ দিয়ে এনবিআর এর প্রধান কার্যালয় সহ দেশে গুরুত্বপূর্ণ লোভনীয় স্থানে গুলোতে ডিউটি করেছে। এবং কর্ম অবস্থায় অফিসের চতুর্থত শ্রেণীর কর্মচারীদের ব্যবহার করে দুই হাতে কামিয়েছে শত কোটি টাকা।
বর্তমান কর্মরত ঢাকায় একজন সহকারী কাস্টম্স কমিশনারের সাথে তাদের বেতনের বিষয়ে কথা বললে তিনি জানান, আমরা যে টাকা বেতন পেয়ে থাকি এ টাকা দিয়ে পরিবার নিয়ে চলা সম্ভাব, অনেক সঞ্চায় বা অনেক সম্পদ গড়া সম্ভাব নয়।
কাস্টম্স কমিশনারের সাবেক একজন পরিচালকের সাথে একজন সহকারী কাস্টম্স কমিশনারের দায়িত্ব,বেতন কাঠামো,নিয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান,যদি কারো সঞ্চায় থেকে থাকে,বা অরিশ সূত্রে কোন সম্পদ পেয়ে থাকে তা হলে তর সম্পদ থাকতেই পারে, কিনতে পারে। আর যদি কারোর পূর্বে সার্পোট না থেকে থাকে,আপনি যে বর্ণনা দিয়েছেন এ পদে চাকরি করে দুর্নীতি ছাড়া এত সম্পদের মালিক হওয়া সম্ভাব নয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের একজন অধ্যাপক চেয়ারপার্সন শাহারিয়া আফরিন জানান,দূর্নীতি অন্য ছাড়া এত পরিমান সম্পদের মালিক হওয়া যায় না। হিসাবটা অনেক সহজ।
এব্যাপারে অবসর প্রাপ্ত সহকারী কাস্টম্স কমিশনার আলতাফ হোসেনের সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি অসুস্থ বলে জানান এবং এতদ্বসংক্রান্তে কোন কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তখন তার ছেলে ফোন ধরে প্রতিবেদককে দেখে নেওার হুমকি দেন।
কেরানী থেকে পদোন্নতি প্রাপ্ত কাস্টমসের এই সহকারী কমিশনার দীর্ঘ চাকুরজীবনে এহেন অঢেল ধন সম্পদের মালিকানা ও মুক্তি যোদ্ধা সার্টিফিকেটের বিষয়টি স্থানীয় জনমনে আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়েছে। তারা বিষয়টি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশনের সঠিক তদন্ত আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছে।