মোঃ মামুন: বাংলাদেশের এয়ার কন্ডিশনিং ও রেফ্রিজারেশন খাতে চাঞ্চল্যকর একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ব্রামা সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। গ্যাসের দাম কয়েক গুণ বেশি ও ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে ইএনডিপি’র অর্থ লোপাটের অভিযোগ করা হয়েছে ব্রামা নেতা আসাদুজ্জামান চক্রের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে শুক্রবার বিকালে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনে এক সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ আরএসি মালিক শ্রমিক কল্যাণ এসোসিয়েশন। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়েছে, বাংলাদেশ রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (ব্রামা)’র এই সিন্ডিকেট তাদের দুর্নীতি ঢাকতে আগামী ৯ ফ্রেব্রুয়ারি মানববন্ধনের ডাক দিয়েছে। তবে আরএসি মালিক শ্রমিক কল্যাণ এসোসিয়েশন জানিয়েছে ব্রামা সিন্ডিকেট মানববন্ধন করলে একই দিন একই সময় একই স্থানেও তারাও কর্মসূচি পালন করবে। এ নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ আরএসি মালিক শ্রমিক কল্যাণ এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শাহ আলম জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সহায়তায় ব্রামা সিন্ডিকেট আর-২২ গ্যাস আমদানির জন্য ২১ জনের নামে ৫১টি লাইসেন্স ইস্যু করেছে। যে কারণে এই সিন্ডিকেটটি একটি ৭ হাজার টাকা মূল্যের সিলিন্ডার বিক্রি করছে ২৬ হাজার টাকায়। এমনকি, সিলিন্ডারের রঙ পরিবর্তন করে জালিয়াতি করে নিম্নমানের গ্যাস বিক্রি করছে তারা। ফেলে এসি বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে, যা মানুষের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।
এছাড়াও আসাদুজ্জামান চক্র জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠান ইউএনডিপির অনুদান তহবিল থেকেও কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয় আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে। সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয় যে, মানিকগঞ্জে ‘কুলিং পয়েন্ট’ নামে একটি ভুয়া চিলার উৎপাদন কারখানা দেখিয়ে ইউএনডিপির কাছ থেকে ৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন আসাদুজ্জামান ও তার সহযোগীরা। তবে বাস্তবে সেখানে কোনো চিলার কারখানা নেই। ‘কুলিং পয়েন্ট‘ নামের সাইনবোর্ড ঝোলানো থাকলেও, সেখানে মুরগির খামার ও ছাগল পালন করা হচ্ছে। গত জানুয়ারি মাসে এই ঘটনা প্রকাশিত হয় গণমাধ্যমে। এরপরই পিঠ বাঁচাতে ইউএনডিপি থেকে পরবর্তী অনুদানের কিস্তি আদায়ের জন্য নাটকীয়তার আশ্রয় নেন আসাদুজ্জামান। তিনি রাতারাতি সেখানে কয়েকটি মেশিন ভাড়ায় নিয়ে ফটোসেশন ও ভিডিও ধারণ করে তা ছড়িয়ে দেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উল্লেখ করা হয় যে, ব্রামার নাম ব্যবহার করে বিদেশে মানবপাচারের মতো গুরুতর অপরাধও সংঘটিত হয়েছে। মোহাম্মদ বাশিরুল হক নামে এক ব্যক্তিকে ব্রামার সদস্য না হয়েও সদস্য দেখিয়ে জাপানে পাঠানো হয়। এর বিনিময়ে তার কাছ থেকে ২২ লাখ টাকা নেওয়া হয়।
Leave a Reply