গত ১০ নভেম্বর রবিবার থেকে বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে তৃতীয় ধাপ হতে বাদপড়া চলমান যোগ্য বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণে দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ২য় দিনের মত অবস্থান কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। তৃতীয় ধাপ হতে বাদপড়া চলমান তিন পার্বত্য জেলা ও সিটমহলসহ সাড়ে ৪ হাজারের অধিক যোগ্য বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ এবং সাবেক সচিব মোঃ আকরাম আল হোসেন ২০২০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ক্ষমতার অপব্যবহার করে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে। যাতে উল্লেখ ছিল আর কোন বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের আপাতত সুযোগ নাই। সেই বিজ্ঞপ্তি অবৈধ ও বাতিলের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচির সভাপতিত্ব করছেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ মিজানুর রহমান। বক্তব্য রাখেন সংগঠনের মহাসচিব মোঃ ফিরোজ উদ্দিন, শিক্ষক নেতা মামুনুর রশিদ খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী লিটন, প্রচার সম্পাদক নাসির উদ্দিন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা তামান্না ইয়াসমিন, শিক্ষক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন, খায়রুল ইসলাম, জুয়েল, নিজাম, বুলবুল, মাহবুব এবং বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় সমন্বয়কারীরা। বক্তারা বলেন, ৫ই আগস্ট ২০২৪ ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানের ফলে যে নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে তৃণমূল পর্যায়ে শিক্ষক হিসেবে আমরা ছাত্র-জনতা এবং প্রধান উপদেষ্টা ও প্রাথমিক শিক্ষা উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রত্যাশা করি অচিরেই আমাদের দাবি মেনে আমাদেরকে স্কুলে ফিরিয়ে নিবে। আমরা এক যুগেরও বেশি বিনা বেতনে সর্বজনীন শিক্ষাকে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। ২০১৩ সালের ৯ই জানুয়ারি সরকারের ঘোষণার নীতিমালার আলোকে বাংলাদেশে আর কোন চলমান বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকবে না। আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম আমাদেরকে অচিরেই সরকারিকরণ করা হবে। কিন্তু ২৬১৯৩টি বিদ্যালয় তিন ধাপে জাতীয়করণ করা হলেও তৃতীয় ধাপে আমাদেরকে বাদ দিয়ে যোগ্যতা ও মেধাসম্পন্ন শিক্ষক ও বিদ্যালয়কে বঞ্চিত করেছে। এতে করে তৃণমূল গ্রামে শিক্ষা হার কমে আসছে। আমরা বিশ্বাস করি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রায় সাড়ে ৪ হাজারেরও অধিক জাতীয়করণের ব্যবস্থা দ্রুত করবেন। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, তৎকালীন ফ্যাস্টিস সরকার ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি সারাদেশের ২৬১৯৩ টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা করেন। কিন্তু সমপর্যায় যোগ্য থাকা সত্বেও শুধুমাত্র রাজনৈতিক হীনমন্যতায় কারণে সারা দেশে তিন পার্বত্য জেলা ও ছিটমহল সহ প্রায় ৪ হাজার অধিক বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ হতে বঞ্চিত হয়। সারাদেশের ১৬ হাজার অধিক শিক্ষক পরিবার ও ৮ লক্ষাধিক কোমলমতি শিশু তাদের রাষ্ট্রীয় মৌলিক অধিকার হতে বঞ্চিত হয়। জাতীয়করণের দাবিতে বিগত ২০১৫ সাল হতে দীর্ঘদিন যাবত আন্দোলন ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে। ২০১৮ সালে ১৮ দিন ২০১৯ সালে ৫৬ দিন জাতীয় প্রেসক্লাবে অনশন পালন করে ১৮ সালে অনশন চলাকালীন সময়ে তৎকালীন সচিব আকরাম আল হাসান আন্দোলনরত শিক্ষকদের নিকট আসে এবং আশ্বস্ত করেন ৬ মাসের মধ্যে বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণের আওতাভুক্ত ব্যবস্থা করা হবে। আমরা ফ্যস্টিস সরকারের মদদপুষ্ট সাবেক সচিবের বিজ্ঞপ্তি বাতিল সহ বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণের আওতাভুক্ত করার জোর দাবি জানাচ্ছি। সেই সাথে বিদ্যালয়ের অধ্যায়নরত ৮ লক্ষাধিক শিশুর মৌলিক অধিকার সহ রাষ্ট্রীয় সকল অধিকার ভোগের সুযোগ সৃষ্টির দাবি জানাচ্ছি। অবস্থান কর্মসূচিতে সারাদেশ থেকে আসা হাজার হাজার শিক্ষক- শিক্ষিকাউপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply