ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে দুশ্চিন্তা ৩৭টি স্পট নিয়ে। বেশি যানজটপ্রবণ এলাকা চন্দ্রা মোড়, নতুন ও পুরাতন ইপিজেড, বলিভদ্র, গোড়াই মিলগেট, ভূয়াপুর লিংক রোড থেকে বঙ্গবন্ধুসেতু পূর্ব পর্যন্ত। এ ছাড়া ঝাউল ব্রিজ থেকে হাটিকুমরুল, ষোলমাইল বাজার, মাটিডালি, পলাশবাড়ী চৌরাস্তায়ও গাড়ির জটের আশঙ্কা আছে।
এই সড়কে চলাচলকারী হানিফ পরিবহনের চালক আব্দুর রহমান বলেন, অনেক দিন ধরে নবীনগর-চন্দ্রা সড়ক সংস্কার হচ্ছে। এক পাশ খোলা রেখে অন্য পাশে কাজ চলছে। এতে এক পাশ দিয়ে দুই দিকের গাড়ি চলতে গিয়ে অনেক যানজট লাগে। ঈদের আগে কাজ শেষ না হলে ভোগান্তি চরমে পৌঁছাবে।
সাভার ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক হোসেন শহীদ চৌধুরীও বলেন, ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আর সড়কের সংস্কারকাজ চলমান থাকলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কসহ আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল হয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়তে পারে।’
এ প্রসঙ্গে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব বলেন, ঈদে বাড়ি ফেরা যাত্রীদের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে অধিকাংশ রাস্তা ফোর লেন করা হয়েছে। দুই-একটা জায়গায় কাজ বাকি থাকলেও ঈদের আগে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে।
এবার ঈদে ভোগান্তি পোহাতে হতে পারে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ব্যবহারকারীদের। এই পথের যানজটপ্রবণ এলাকা হোতাপাড়া বাস স্টপেজ। এ ছাড়া ভবানীপুর ও বাঘের বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকা পার হতে সময় লাগতে পারে বেশি।
ওই রাস্তায় চলাচলকারী বাসের হেল্পার জানান, রাস্তায় বিশৃঙ্খলভাবে অটোরিকশা-ভ্যান থাকার কারণে যানজট বেড়ে যায়।
এদিকে উত্তরবঙ্গের মহাসড়কের বগুড়া অংশে যানজট হতে পারে পুলিশই এমন আটটি পয়েন্ট চিহ্নিত করেছে। সেগুলো হ+লো শেরপুরের চান্দাইকোনা বগুড়া বাজার, শেরপুরের ধুনট মোড়, শাজাহানপুরের লিচুতলা বাইপাস ও বনানী মোড়, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে, বগুড়া শহরতলির চারমাথা বাস টার্মিনাল, মাটিডালী এবং শিবগঞ্জের মোকামতলা বন্দর।
বগুড়া পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে এসব পয়েন্টে ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজটের আশঙ্কা বেশি মাধবদী বাসস্ট্যান্ড, শেখেরচর, পাঁচদোনা মোড়, ভোলানগর, ইটাখোলা মোড়ে। এ ছাড়া ছনপাড়া, তারাব বাসস্ট্যান্ড, বিশ্বরোড় মোড়, শাহবাজপুর, মাধবপুর বাজার, শায়েস্তাগঞ্জ গোল চত্বরসহ ৩৬টি পয়েন্টে হতে পারে দুর্ভোগের কারণ।
যানজটের আশঙ্কা আছে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কেও। আমিন বাজার, সালেহপুর, নয়ারহাট ব্রিজ, জাগীর ধলেশ্বরী ব্রিজ এলাকায় পোহাতে হতে পারে ভোগান্তি।
এদিকে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধি, পরিবহণ মালিক সমিতির প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ঈদযাত্রায় যানজট সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সাতটি কৌশল নির্ধারণ করা হয়। এসব কৌশলের মধ্যে রয়েছে-ঈদের আগের ৩ দিন এবং পরের ৩ দিন মহাসড়কে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরি চলাচল বন্ধ রাখা; ঈদের দিনসহ আগের ৭ দিন এবং পরের ৫ দিন সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলো সার্বক্ষণিক খোলা রাখা; শিল্পকলকারাখার শ্রমিকদের একত্রে ছুটি না দিয়ে ধাপে ধাপে ছুটি দেওয়ার বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা; জাতীয় মহাসড়ক ও করিডরগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ ঈদের সাত দিন আগেই শেষ করা; সারা দেশের মহাসড়কগুলোর চিহ্নিত ১৫৫টি যানজট স্পট ঈদের আগে ও পরে নিবিড় মনিটরিংয়ের আওতায় আনা ইত্যাদি।