1. [email protected] : ekhonisomoy :
  2. [email protected] : facfltd :
রং নাম্বার জীবন থেকে হারালো স্বামী, সন্তান,সব - এখনই সময় টিভি
May 9, 2025, 4:26 pm

রং নাম্বার জীবন থেকে হারালো স্বামী, সন্তান,সব

Reporter Name
  • Update Time : Tuesday, September 24, 2024
  • 87 Time View

বিশেষ প্রতিনিধিঃ গাজীপুর সালনার মিরের গাও আলা উদ্দিন ও কামরুন্নাহার এর মেয়ে বর্তমান ৩০ বছরের সালমা আক্তার ২০১০ সালের জুলাই মাসের ২ তারিখ বিবাহ হয় গাজীপুর জেলার পাজুলিয়া গ্রামের মিজানুর রহমান এর ছেলে সৌদি প্রবাসী মো. আজাফর সঙ্গে। বিবাহের পর স্বামী বিদেশে চলে যায়।২ বছর বা ৩ বছর পর পর দেশে আসে প্রবাসী স্বামী।
সাজানো গোছানো সংসার।২০১২ সালের ২৮ অক্টোবর ১ম কন্যা সন্তানের মা হয়।মেয়ের নাম রাখে আফরিন আক্তার। ২য় সন্তানের মা হয় ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর। ছেলের নাম প্রবাসী বাবা দেয় আরিফ হোসেন। প্রতিমাসে প্রবাসী স্বামী ২০ হাজার টাকা পাঠাই।সেই টাকা দিয়ে স্বামীর ভিটায় বেশ ভালো ভাবেই দিন কাটছিলো সালমা আক্তারের।শুধু স্বামীর চাহিদা ছাড়া আর কোন শূন্যতা ছিল না।আর এই সুযোগ গ্রহণ করেছিল প্রতিবেশী বিবাহিত রোবেল।২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রাতে সালমা আক্তার এর মোবাইলে রং নাম্বারে কল করে নিজের আসল পরিচয় গোপন করে
রোবেল।নিজের পরিচয় দেয় রনি বলে।বাড়ি বলে নারায়ণগঞ্জ। সালমা আক্তার একাকীত্ব জীবনে নতুন বন্ধু হিসেবে রনিকে গ্রহণ করে। প্রতিদিন চলে রাতদিন তাদের কথা।গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এর ২৪ নং ওয়ার্ডের পাজুলীয়ার রকমান ও হাজেরা খাতুন এর ছেলে রোবেল ওরফে রনি ওরফে রয়েল প্রতিবেশী হওয়ায় সালমা ও তার সন্তানদের প্রতি মুহূর্তের গতিবিধি লক্ষ্য করে এবং সালমার সাথে সেই কৌশলে কথা বলে।এতে সালমা পরোকিয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। এক সময় রনির সাথে সালমা দেখা করতে চায়।রনি অফার করে ঠিক আছে। সেই ভাবে তারা গাজীপুর রেলস্টেশনে দেখা করে।দেখা হলে সালমা বুঝতে পারে রনি আর কেউ না তাদেরই প্রতিবেশী রোবেল ওরফে রয়েল।সালমা রোবেল কে অভিমান করে বলে তুমি আমাকে মিথ্যা বললে কেন?রোবেল তখন হাসতে হাসতে বলে দুষ্টু ভাবি সত্যি বললে তো তুমি আমাকে ধরা দিতা না।দু’জন এক সময় একে অপরকে মেনে নেয়।এরপর বিভিন্ন সুযোগে দুজন শারিরীক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।৮ মাসের শারিরীক সম্পর্কে সালমা আক্তার এর গর্ভে সন্তান চলে আসে।এতে সালমা ও রোবেল দুজনই ভয় পেয়ে যায়।এপ্রিল -২০২৪ প্রথম দিকে রোজার মাসে তিন মাসের বাচ্চা নষ্ট করে ফেলে। বিষয়টি এক কান দুকান হয়ে এলাকায় জানাজানি হয়ে গেলে প্রবাসী স্বামী বিষয়টি জানতে পেরে টাকা বন্ধ করে দেয়। প্রবাসী স্বামীর সিদ্ধান্তে পিতা মিজানুর রহমান ও তাদের আত্মীয়রা স্থানীয় বিচার শালিসির মাধ্যমে সালমা আক্তার কে দেল মোহরের ১লক্ষ ৬০ হাজার টাকা নগদ অর্থ দিয়ে ডিভোর্স দিয়ে দেয় এবং সালমার ২ সন্তান মেয়ে ১২ বৎসরের আর ছেলে ৮ বছরের ও সাজানো নিজের ঘর থেকে বের হয়ে দিশেহারা হয়ে যায় সালমা।তখন এলাকাবাসীর অবস্থা উপলব্ধি করে রোবেল বুঝতে পারে বাঁচার কোন উপায় নাই, তখন সালমা কে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়।সালমার ডিভোর্স এর ১দিন পরই ২৭ আগস্ট
২০২৪ ইং তারিখে রোবেল তার এক আত্মীয়র বাড়িতে নিয়ে সালমা কে বিবাহ করে। সালমা ১০ লক্ষ টাকা কাবিন দাবি করলেও রোবেল ৫ লক্ষ টাকা রাজি হয়।তবে রোবেল ২ লক্ষ টাকা কাবিন করলেও গাজীপুর সদর উপজেলা বাড়িয়া ইউনিয়ন কুমুন বাজার এর কাজী মোঃ নুরুল আমীরের যোগসাজশে ২ লাখ টাকা উসুল দেখায়।বিবাহ এর পর কাবিননামা সালমা দেখতে চাইলে তখন রোবেল বলে চলো আগে বাসর করি।রোবেল ও সালমার নতুন জীবন শুরু হয়।তাদের ১ম বাসর রাত হয় একটি আবাসিক হোটেলে। সালমা কে রোবেল তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য রওনা দেয় অন্যদিকে কৌশলে সালমা কে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য নতুন ফাঁদ পাতে।


সেই ফাঁদের সহযোগী ছিল রোমেল এর বড় ভাই রাসেল ও চাচাত ভাই সাইফুল। তারা মোটরসাইকেল নিয়ে ছিল। বিষয়টি বুঝতে পেরে সালমা কোন কিছু বুঝার আগেই রিক্সা থেকে নেমে পালিয়ে ফাওকাল রেস্টুরেন্টে রাত ১০ পর্যন্ত অপেক্ষা করে এবং রোবেল এর বড় ভাই রাসেল ভাই কে বার বার কল দিয়ে কোন সাড়া না পেয়ে নিরুপায় হয়ে পূর্বের স্বামীর চাচাতো ভাই শামছুর রহমান ভাই এর বাসায় গিয়ে আশ্রয় নেয় একটি রাতের জন্য এবং বিস্তারিত তাকে জানাই।সকালে সালমা তার বাড়ি থেকে বের হতে একটু দেরি করলে তখন তার উপর চড়াও হয় এবং শারিরীক ভাবে নির্যাতন করে। সেখান থেকে দিনের বেলা সালমা আক্তার একাই তার স্বামী রোবেল এর বাড়ি যায়। পথে বড় ভাই রাসেল এর সাথে দেখা হলে সে সাথে নিয়ে যায়।তখন সালমার শরীর এতো ক্লান্ত ছিল সে আর বসে থাকতে পারিনি। বাসার বারান্দার খাটে গিয়ে শুয়ে ঘুমিয়ে যায়।৪ ঘন্টা পড়ে ঘুম থেকে উঠে সালমার স্বামীর ১ম স্ত্রী রুনা আপার কাছে গিয়ে ক্ষমা চায়,ভুল স্বীকার করে,নতো হয়।কিন্তু সে সময় চরম উত্তেজিত হয়ে অশ্লীল গালাগালি সহ খুব খারাপ ব্যাবহার করে সালমার সাথে এবং জোরে লাথি দিয়ে খাট দিয়ে নীচে ফেলে দেয়।তখন রোবেল তামাশা দেখে কিছু না বলে নিজের দোকানে চলে যায়। বিবাহের ২য় দিন থেকে সালমা অসহনীয় নির্যাতনের শিকার হয়।তাকে পাগল হিসেবে সবার কাছে প্রমাণ করার জন্য নানা কৌশল করে।হঠাৎ একদিন সালমা কে রোবেল বলে আমার ঘরে আসো।শত দুঃখ -কষ্টের মধ্যেও সালমার মুখে হাসি আসে।
সে মনে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।সালমাকে ঘরে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয় রোবেল। তারপর কোনকিছু বুঝে উঠার হঠাৎ জোরে জোরে চিৎকার করে দরজা খুলে বের হয়ে সবাইকে বলছে আমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছে সালমা।সে তার অন্ডকোষ জোরে চেপে ধরেছে। এই মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বাড়ির সবাই মিলে জোর করে ঘর থেকে বের করে সালমা কে। যার যেমন ইচ্ছা তেমন করে মেরে প্রচন্ড আহত করে সবাইকে বলে সালমা পাগল হয়ে গেছে। তার আচারণ অস্বাভাবিক। এই কথা বলেই তার হাত পা দরি ও শিকল দিয়ে শক্ত করে বেধে ফেলে এবং সালমার বাবা কে খবর দেয় আপনার মেয়ে পাগল হয়ে গেছে দেখে যান।খবর শুনে সালমার বাবা ছুটে আসে।সে এসে দেখে তার মেয়ের হাত-পা শিকল দিয়ে বাধা। এ সময় ঘরের সামনে সিএনজি আসে সবাই মিলে সালমাকে সিএনজিতে তুলে সেখানেও তার দিয়ে শক্ত করে বেধে তাকে গাজীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া পর যখন ডাক্তার চিকিৎসা দিতে আসে তখন সালমা বলে আমি পাগল না আমাকে পাগল বানানো হচ্ছে। ডাক্তার সাহেব বুঝতে পারে তখন সালমা অন্য দিক থেকে বের হয়ে পালিয়ে যায়।
সলমা এখন কোথায় যাবে।তার তো এখন কোথায় কেউ নেই। সালমার বাবা মনে করে তার মেয়ে সত্যি পাগল হয়ে গেছে। এ ছাড়া যাওয়ার আর কোন জায়গা নেই। আবারও রোবেল এর সামনে পড়ে তখন আবার ওঝার কাছে জোর করে নিয়ে যায় সেখানেও চিকিৎসার নামে চলে সীমাহীন অত্যাচার।সবার কাছে পাগল ঘোষণা দিয়ে ১৩ দিনের মাথায় ১০ সেপ্টেম্বর সালমাকে তালাক দেয় রোবেল। কাবিন এর টাকা তো আগেই উসুল দেখিয়েছে। এখন সবকিছু হারিয়ে পথে পথে ঘুরছে সালমা। একটা রং নাম্বার সালমার সাজানো সোনার সংসার শেষ হয়ে গেলো।পেটের সন্তান কাছে নেই, প্রথম স্বামীর বাড়ি যাওয়ার অধিকার নেই, সালমা যদি ভুল করে পরোকিয়া প্রেমে জড়িয়ে স্বামী, সন্তান, ঘর হারায় তবে একই অপরাধ করে বহুরুপী রনি ওরফে রোবেল ওরফে রয়েল তার ঘর সংসার নিয়ে সুখে শান্তিতে কেন বসবাস করবে?সেদিন রনি সেজে রং নাম্বার কল দিয়ে অবৈধ সম্পর্কে না জড়াতো,তাহলে আজকে সালমা আক্তার এর জীবনে ঘোর অন্ধকার, অমানিশা নেমে আসতো না।একই অপরাধ করে একজন সর্বস্ব হারাবে অন্য জন নতুন সালমা শিকারের প্রস্তুতি নেবে?

ন্যায় বিচারের দাবিতে সালমা একটি মানবাধিকার সংগঠন এর আশ্রয় নিয়েছে। বাকীটা সময় বলে দেবে?

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved
Theme Customized By LiveTV